ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৫ মে ২০২৩
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ খবর

ফিড মিল ল্যাবে (কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব) কি কি কাজ করা হয়? ভেটদের সম্ভাবনা কতটা উজ্জ্বল? – ফিড মিল ল্যাব সমাচার- পর্ব ০১

Admin
মে ২৫, ২০২৩ ১১:৩০ অপরাহ্ন । ১০ জন
Link Copied!
সোনাল কৃষি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন আমাদের ফেসবুক পেজ টি

ফিড মিল ল্যাবে (কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব) কি কি কাজ করা হয়? ভেটদের সম্ভাবনা কতটা উজ্জ্বল? – ফিড মিল ল্যাব সমাচার- পর্ব ০১

সাধারণত ফিড মিলের ল্যাবরেটরিতে ফিডের কাচামাল এবং ফিনিশড ফিড এর গুনগত মান পরীক্ষা করা হয়। এই মান পরীক্ষা সাধারণত ৩ টি ধাপে হয়ে থাকে।

  • ১) ফিজিক্যাল টেস্ট
  • ২) কেমিক্যাল টেস্ট
  • ৩) বায়োলজিক্যাল টেস্ট

© ফিজিক্যাল টেস্টঃ

এই অংশে ফিডের কাচামাল এবং উৎপাদিত ফিডের বাহ্যিক গুনাগুন যাচাই করা হয়। যেমনঃ কালার, সাইজ, ঘ্রাণ, ফাঙ্গাস, ডাস্ট (ধুলাময়লা), পেস্ট (পোকামাকড়) ইত্যাদি। তবে আদ্রতা বা ময়েশ্চার টেস্ট ও এই ফিজিক্যাল টেস্টের মধ্যে পড়ে। কিন্তু আমরা মুলত এটাকে প্রক্সিমেট এনালাইসিস এ আলোচনা করব।

® কেমিক্যাল টেস্টঃ

ফিডের কাচামাল এবং উৎপাদিত ফিডের বিভিন্নধরনের কেমিক্যাল টেস্ট করতে হয়। এর মধ্যে প্রক্সিমেট এনালিসিসকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়।

প্রক্সিমেট এনালাইসিস বলতে –

  • ১) ময়েশ্চার,
  • ২) ক্রুড প্রোটিন,
  • ৩) ক্রুড ফাইবার,
  • ৪) ক্রুড ফ্যাট (ইথার এক্সট্রাক্ট) এবং
  • ৫) এ্যাশ টেস্ট

এই ৫ টি টেস্ট কে একত্রে বুঝানো হয়।

  • ৬) NFE টেস্টঃ উপরের ৫ টি টেস্টের রেজাল্ট থেকে আবার সূত্রের সাহায্যে NFE (নাইট্রোজেন ফ্রি এক্সট্রাক্ট) বের করা হয়।
  • ৭) ME টেস্টঃ NFE টেস্টের রেজাল্ট বের হয়ে গেলে,এবার ক্রুড প্রোটিন, ক্রুড ফ্যাট (ইথার এক্সট্রাক্ট) এবং NFE এর রেজাল্ট ব্যবহার করে সূত্রের সাহায্যে ME (মেটাবলিক এনার্জি) রেজাল্ট বের করা হয়।

এই টেস্ট গুলোর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট করা হয়ে থাকেঃ

  • ৮) NPN (নন-প্রোটিন নাইট্রোজেনাস সাবস্টেন্স) টেস্ট
  • ৯) সিলিকা টেস্ট
  • ১০) ক্যালসিয়াম টেস্ট
  • ১১) ফসফরাস টেস্ট
  • ১২) ইউরিয়েজ এক্টিভিটি টেস্ট
  • ১৩) বিভিন্নরকম টক্সিন টেস্ট
  • ১৪) আর বেশ কিছু টেস্ট

ফিড মিল কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবে ভেটদের সম্ভাবনাঃ

পূর্বে ফিড মিলের ল্যাবরেটরিগুলোতে সাধারণত টেকনিশিয়ান এবং কেমিস্ট এরাই কাজ করতো। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী এইসকল ল্যাবেও টেকনিক্যাল জনবল নিয়োগ দেয়ার বিধিমালা উল্লেখ করা আছে। তাই ফিড মিলের স্বর্গরাজ্য খ্যাত গাজীপুরের ডিএলও মহোদ্বয়ের তৎপরতায় ফিডমিল গুলোর কর্তাব্যক্তিরা এখন এইসব ফিড মিলের জন্য কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার হিসেবে “ডিভিএম/এএইচ” গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ দিতে বাধ্য হচ্ছে নতুবা তাদের ফিড মিলের লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছে না। ফলে এখন গাজীপুরের সকল ফিড মিল অফিসিয়ালি একজন ভেট/এএইচ গ্রাজুয়েট নিতে বাধ্য হচ্ছে।

এছাড়াও এখানে শেখার অবারিত সুযোগ রয়েছে। পোল্ট্রি সেক্টরে এখন অন্যতম ডিমান্ডেবল পেশা হচ্ছে “নিউট্রিশনিস্ট বা পুষ্টিবিদ” তাই একটু হার্ড স্টাডি এবং “পোল্ট্রি নিউট্রিশন বা এনিমেল নিউট্রিশনে মাস্টার্স” করে নিলে “পুষ্টিবিদ” হতে পারলে আর আপনাকে পিছু ফিরে তাকাতে হবে না।

আপনারা হয়তো জানেন যে, বাংলাদেশে এখন যারা টপ লেভেলের পুষ্টিবিদ রয়েছেন, তাদের ৮০% এর বেশি হচ্ছেন এএইচ গ্রাজুয়েট আর ১০% ফিশারিজ গ্রাজুয়েট! ভেটরা এ সেক্টরে রয়েছে ঢেড় পিছিয়ে। নিউট্রিশনিস্ট হচ্ছে এমন এক পেশা যেখানে রয়েছে পাহাড় সমান চাহিদা,সম্মান আর ব্যাংক ভর্তি টাকা। এমনো নিউট্রিশনিস্ট রয়েছেন,যারা ২০-৩০ টার অধিক ফিডমিলে কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেন। একবার ভাবুন, প্রতিটি কোম্পানি থেকে যদি মাত্র ৩০,০০০ করে ও সম্মানি নেন (৩০,০০০ এর নিচে কেউ করেনা আমার জানামতে) তাহলে টাকার অংকটা মিলিয়ে নিন নিজের ফোনের ক্যালকুলেটরে!

তবে সেই লেভেলে যেতে,দক্ষতা অর্জন করতে আপনাকে অনুশীলন করতেই হবে। আর এই অনুশীলনের প্রথম ধাপ হচ্ছে- ফিড মিল ল্যাবের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার এর দায়িত্ব পাওয়া। আপনি চাইলে সরাসরি নিউট্রিশনে মাস্টার্স করেও পুষ্টিবিদ হিসেবে জয়েন করতে পারেন,তবে ওই ল্যাবের প্র‍্যাকটিক্যাল চর্চা থেকে আপনি থাকবেন পিছিয়ে,আপনার থেকে যাবে অসম্পূর্ণতা।

তাই ভেটদের জন্য বিরাট এক সম্ভাবনাময় ফিল্ড হচ্ছে – ফিড মিল ল্যাবের কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার এবং নিউট্রিশনিস্ট হিসেবে কাজ করা। চলবে………

( ২য় পর্বে লিখব “ফিড মিল ল্যাবে কি কি মেশিন ও ইন্সট্রুমেন্ট থাকে বা লাগে)

error: Content is protected !! Don\'t try to copy!!!